একদল সমর্থক উচ্চ স্বরে স্লোগান দিয়েই চলেছে ‘আবাহনী, আবাহনী’। হঠাৎ করে কেউ এসে পড়লে বুঝতেই পারতেন না আসলে কোন আবাহনী জিতেছে। দুটিই আবাহনী, পতাকা, জার্সি, সংস্কৃতি সবই যে একাকার!
এমন দৃশ্য বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম তো বটেই, দেশের অন্য কোনো মাঠেও আগে কখনো দেখা যায়নি। দুই আবাহনী এই প্রথম মুখোমুখি হলো ঘরোয়া কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে, তাতে জিতল চট্টগ্রাম আবাহনী। ক্লাবটি এই প্রথম সর্বোচ্চ পর্যায়ে কোনো ট্রফি ঘরে তোলার আনন্দে উদ্বেল হলো কাল সন্ধ্যায়। ঢাকা আবাহনী শুধু চেয়ে চেয়েই দেখেছে চট্টগ্রাম আবাহনীর এই উদ্যাপন।
শেষ বাঁশির সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রাম আবাহনী স্লোভাক কোচ যোসেফ পাভলিক এসে সান্ত্বনা দিলেন ঢাকা আবাহনীর কোচ অমলেশ সেনকে। মুখে অস্ফুট উচ্চারণ, ‘আবাহনী ঢাকা, বিগ রেসপেক্ট। ইউ পিপল গুড প্লে...গুড প্লে।’ ততক্ষণে স্মারক নিতে মঞ্চে ডাক পড়ল জয়ী দলের ৪৩ বছর বয়সী কোচের। যাওয়ার পথেই তাঁকে নিয়ে চট্টগ্রাম আবাহনীর খেলোয়াড়-কর্মকর্তাদের সে কী উচ্ছ্বাস!
কিন্তু ২-০ গোলে হেরে ঢাকা আবাহনী যেন নিস্তব্ধ। আত্মসমালোচনা করে চলেছেন ম্যানেজার সত্যজিৎ দাশ রুপু, ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে তাঁর নেতৃত্বেই আবাহনী শেষবার ঘরে তোলে এই স্বাধীনতা কাপের ট্রফি। দীর্ঘ বিরতি দিয়ে আরেকটি স্বাধীনতা কাপ জয়ের কাছে এসে আসল দিনেই মাঠে নিজেদের সেরাটা দিতে পারল না ঢাকা আবাহনী।
দুই আবাহনীর ব্যতিক্রমী এই ফাইনালটা ঢাকা আবাহনী জিততে পারল না অনেক ভুলের কারণে। খেলোয়াড়েরা বল তুলে দিয়েছেন প্রতিপক্ষের পায়ে, প্রথমার্ধের চেয়ে দ্বিতীয়ার্ধেই এই ভুলটা তাদের বেশি ছিল। তিন বড় অস্ত্র সানডে, লি টাক ও কামারা কেউই ছন্দে ছিলেন না। সানডে নষ্ট করলেন গোটা তিনেক সুযোগ, লি টাকও এদিন ভুলে গেলেন গোলের রাস্তা।
গ্যালারির দিকে চোখ রেখে মনেই হচ্ছিল না এটি একটা ফাইনাল ম্যাচ। মাত্র কয়েক হাজার দর্শক! উত্তাপ নেই, ম্যাচেও ছিল না পরিকল্পিত আনন্দদায়ী ফুটবল। প্রথমার্ধটা ছিল নিষ্প্রাণ। তবে ম্যাচে প্রাণ ফিরল দ্বিতীয়ার্ধে, যখন দু-দুটি গোল করল চট্টগ্রাম আবাহনী।
অফসাইডের ফাঁদ তৈরি করেছিল ঢাকা আবাহনীর রক্ষণ। ওটা করতে গিয়েই ৫৫ মিনিটে সর্বনাশ। ডিফেন্ডার তপু বর্মণ সহজ বলটা হারালেন, তাঁর অসতর্কতায় ছোঁ মেরে বলটা নিলেন টুর্নামেন্ট-সেরা চট্টগ্রাম আবাহনীর লিওনেল প্রিউক্স। হাইতিয়ান স্ট্রাইকার এককভাবে ঢুকে এরপর কোনাকুনি শটে করলেন ১-০। ম্যাচে ফেরার চেষ্টায় ব্যর্থ ঢাকা আবাহনী ৬ মিনিট পরই খায় দ্বিতীয় গোল। এটি অসাধারণ এক গোল। তরুণ খেলোয়াড় কৌশিকের ক্রসকে দুর্দান্ত সাইড ভলিতে গোলে পরিণত করেন তরুণ ফরোয়ার্ড রুবেল মিয়া। তাঁর এই গোল অনেকদিন মনে থাকবে দর্শকদের।
লিওনেল ও রুবেলের গোলে চট্টগ্রাম আবাহনী যোগ্যতর দল হিসেবেই মৌসুমের প্রথম ফাইনালটা জিতল। তাদের রানিং ছিল দারুণ, মোটের ওপর গতিতেই তারা পেছনে ফেলেছে ঢাকা আবাহনীকে। নিজেরা খেলতে না পারলেও ঢাকা আবাহনী যাতে মাথা তুলতে না পারে সেসব রাস্তাও বন্ধ করে দেয় চট্টগ্রাম আবাহনী। একটু খালি জমিও তারা দিতে চায়নি প্রতিপক্ষকে। রক্ষণ জমাট রেখে পাল্টা আক্রমণে দ্রুত উঠেছে এবং সুফলও তুলেছে ঘরে।
ঢাকা আবাহনী সুযোগ তৈরি করের কাজে লাগাতে পারেনি, চট্টগ্রাম আবাহনী এখানেই ষোলো আনা সফল। তা দেখে হতাশ সত্যজিৎ দাশ রুপু বলছিলেন, ‘এমন কঠিন লড়াইয়ের ম্যাচে সুযোগ হারালে খেসারত দিতেই হয়, যেটা দিলাম আমরা।’
তাঁর পাশ দিয়ে তখন আকাশি-নীল পতাকা নিয়ে ছুটছেন চট্টগ্রাম আবাহনীর কর্মকর্তারা। সন্ধ্যাটা যে তাঁদের কাছে স্মরণীয়। ঘরোয়া ফুটবলে প্রথম ট্রফি জয়, সেটিও বড় আবাহনীকে হারিয়ে! ঢাকা আবাহনীর হৃদয় ভাঙলে ভাঙুক, এই মাহেন্দ্রক্ষণে চট্টগ্রাম আবাহনীর তা নিয়ে ভাবার সময় আছে!
চট্টগ্রাম আবাহনী: আশরাফুল রানা, সোহেল জুনিয়র, রেজা, সৈকত (শরিফুল), আরমান আজিজ, রুবেল (ইব্রাহিম), তারিক আল জানাবি, কৌশিক, অ্যালিসন, জাহিদ, লিওনেল (মিঠু)।
ঢাকা আবাহনী: শাকিল, আরিফুল, ওয়ালী, তপু, মামুন মিয়া, ইমন, ফয়সাল মাহমুদ (শাহেদ), জুয়েল রানা, লি টাক, সানডে, কামারা (জীবন)।
এমন দৃশ্য বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম তো বটেই, দেশের অন্য কোনো মাঠেও আগে কখনো দেখা যায়নি। দুই আবাহনী এই প্রথম মুখোমুখি হলো ঘরোয়া কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে, তাতে জিতল চট্টগ্রাম আবাহনী। ক্লাবটি এই প্রথম সর্বোচ্চ পর্যায়ে কোনো ট্রফি ঘরে তোলার আনন্দে উদ্বেল হলো কাল সন্ধ্যায়। ঢাকা আবাহনী শুধু চেয়ে চেয়েই দেখেছে চট্টগ্রাম আবাহনীর এই উদ্যাপন।
শেষ বাঁশির সঙ্গে সঙ্গে চট্টগ্রাম আবাহনী স্লোভাক কোচ যোসেফ পাভলিক এসে সান্ত্বনা দিলেন ঢাকা আবাহনীর কোচ অমলেশ সেনকে। মুখে অস্ফুট উচ্চারণ, ‘আবাহনী ঢাকা, বিগ রেসপেক্ট। ইউ পিপল গুড প্লে...গুড প্লে।’ ততক্ষণে স্মারক নিতে মঞ্চে ডাক পড়ল জয়ী দলের ৪৩ বছর বয়সী কোচের। যাওয়ার পথেই তাঁকে নিয়ে চট্টগ্রাম আবাহনীর খেলোয়াড়-কর্মকর্তাদের সে কী উচ্ছ্বাস!
কিন্তু ২-০ গোলে হেরে ঢাকা আবাহনী যেন নিস্তব্ধ। আত্মসমালোচনা করে চলেছেন ম্যানেজার সত্যজিৎ দাশ রুপু, ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে তাঁর নেতৃত্বেই আবাহনী শেষবার ঘরে তোলে এই স্বাধীনতা কাপের ট্রফি। দীর্ঘ বিরতি দিয়ে আরেকটি স্বাধীনতা কাপ জয়ের কাছে এসে আসল দিনেই মাঠে নিজেদের সেরাটা দিতে পারল না ঢাকা আবাহনী।
দুই আবাহনীর ব্যতিক্রমী এই ফাইনালটা ঢাকা আবাহনী জিততে পারল না অনেক ভুলের কারণে। খেলোয়াড়েরা বল তুলে দিয়েছেন প্রতিপক্ষের পায়ে, প্রথমার্ধের চেয়ে দ্বিতীয়ার্ধেই এই ভুলটা তাদের বেশি ছিল। তিন বড় অস্ত্র সানডে, লি টাক ও কামারা কেউই ছন্দে ছিলেন না। সানডে নষ্ট করলেন গোটা তিনেক সুযোগ, লি টাকও এদিন ভুলে গেলেন গোলের রাস্তা।
গ্যালারির দিকে চোখ রেখে মনেই হচ্ছিল না এটি একটা ফাইনাল ম্যাচ। মাত্র কয়েক হাজার দর্শক! উত্তাপ নেই, ম্যাচেও ছিল না পরিকল্পিত আনন্দদায়ী ফুটবল। প্রথমার্ধটা ছিল নিষ্প্রাণ। তবে ম্যাচে প্রাণ ফিরল দ্বিতীয়ার্ধে, যখন দু-দুটি গোল করল চট্টগ্রাম আবাহনী।
অফসাইডের ফাঁদ তৈরি করেছিল ঢাকা আবাহনীর রক্ষণ। ওটা করতে গিয়েই ৫৫ মিনিটে সর্বনাশ। ডিফেন্ডার তপু বর্মণ সহজ বলটা হারালেন, তাঁর অসতর্কতায় ছোঁ মেরে বলটা নিলেন টুর্নামেন্ট-সেরা চট্টগ্রাম আবাহনীর লিওনেল প্রিউক্স। হাইতিয়ান স্ট্রাইকার এককভাবে ঢুকে এরপর কোনাকুনি শটে করলেন ১-০। ম্যাচে ফেরার চেষ্টায় ব্যর্থ ঢাকা আবাহনী ৬ মিনিট পরই খায় দ্বিতীয় গোল। এটি অসাধারণ এক গোল। তরুণ খেলোয়াড় কৌশিকের ক্রসকে দুর্দান্ত সাইড ভলিতে গোলে পরিণত করেন তরুণ ফরোয়ার্ড রুবেল মিয়া। তাঁর এই গোল অনেকদিন মনে থাকবে দর্শকদের।
লিওনেল ও রুবেলের গোলে চট্টগ্রাম আবাহনী যোগ্যতর দল হিসেবেই মৌসুমের প্রথম ফাইনালটা জিতল। তাদের রানিং ছিল দারুণ, মোটের ওপর গতিতেই তারা পেছনে ফেলেছে ঢাকা আবাহনীকে। নিজেরা খেলতে না পারলেও ঢাকা আবাহনী যাতে মাথা তুলতে না পারে সেসব রাস্তাও বন্ধ করে দেয় চট্টগ্রাম আবাহনী। একটু খালি জমিও তারা দিতে চায়নি প্রতিপক্ষকে। রক্ষণ জমাট রেখে পাল্টা আক্রমণে দ্রুত উঠেছে এবং সুফলও তুলেছে ঘরে।
ঢাকা আবাহনী সুযোগ তৈরি করের কাজে লাগাতে পারেনি, চট্টগ্রাম আবাহনী এখানেই ষোলো আনা সফল। তা দেখে হতাশ সত্যজিৎ দাশ রুপু বলছিলেন, ‘এমন কঠিন লড়াইয়ের ম্যাচে সুযোগ হারালে খেসারত দিতেই হয়, যেটা দিলাম আমরা।’
তাঁর পাশ দিয়ে তখন আকাশি-নীল পতাকা নিয়ে ছুটছেন চট্টগ্রাম আবাহনীর কর্মকর্তারা। সন্ধ্যাটা যে তাঁদের কাছে স্মরণীয়। ঘরোয়া ফুটবলে প্রথম ট্রফি জয়, সেটিও বড় আবাহনীকে হারিয়ে! ঢাকা আবাহনীর হৃদয় ভাঙলে ভাঙুক, এই মাহেন্দ্রক্ষণে চট্টগ্রাম আবাহনীর তা নিয়ে ভাবার সময় আছে!
চট্টগ্রাম আবাহনী: আশরাফুল রানা, সোহেল জুনিয়র, রেজা, সৈকত (শরিফুল), আরমান আজিজ, রুবেল (ইব্রাহিম), তারিক আল জানাবি, কৌশিক, অ্যালিসন, জাহিদ, লিওনেল (মিঠু)।
ঢাকা আবাহনী: শাকিল, আরিফুল, ওয়ালী, তপু, মামুন মিয়া, ইমন, ফয়সাল মাহমুদ (শাহেদ), জুয়েল রানা, লি টাক, সানডে, কামারা (জীবন)।
এক নজরে
চ্যাম্পিয়ন
চট্টগ্রাম আবাহনী
রানার্সআপ
ঢাকা আবাহনী
টুর্নামেন্ট-সেরা
লিওনেল প্রিউক্স (চট্টগ্রাম আবাহনী)
ফাইনালের সেরা খেলোয়াড়
রুবেল মিয়া (চট্টগ্রাম আবাহনী)
সর্বোচ্চ গোলদাতা (৬টি)
সানডে সিজোবা (ঢাকা আবাহনী)
এমেকা ডার্লিংটন (শেখ জামাল)
ফিকরু তেফেরা (শেখ রাসেল)
চ্যাম্পিয়ন
চট্টগ্রাম আবাহনী
রানার্সআপ
ঢাকা আবাহনী
টুর্নামেন্ট-সেরা
লিওনেল প্রিউক্স (চট্টগ্রাম আবাহনী)
ফাইনালের সেরা খেলোয়াড়
রুবেল মিয়া (চট্টগ্রাম আবাহনী)
সর্বোচ্চ গোলদাতা (৬টি)
সানডে সিজোবা (ঢাকা আবাহনী)
এমেকা ডার্লিংটন (শেখ জামাল)
ফিকরু তেফেরা (শেখ রাসেল)
info:protom alo
No comments:
Post a Comment