পরিসংখ্যানের
খাতায় রিয়াল মাদ্রিদের জন্য এটা শুধুই একটা জয়। কিন্তু পরশু বার্সেলোনার
সঙ্গে ২-১ গোলের জয়টা রিয়ালের জন্য বোধ হয় তার চেয়েও বেশি কিছু। ন্যু
ক্যাম্পেই বার্সার ৩৯ ম্যাচের রেকর্ডভাঙা অপরাজিত রথ থামিয়ে দেওয়া, বড়
ম্যাচে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর নিজেকে প্রমাণ করা বা লা লিগার ম্যাড়মেড়ে
শিরোপাদৌড়ে একটু প্রাণ ফিরিয়ে আনা। কোচ হিসেবে জিনেদিন জিদান বড় একটা
পরীক্ষায় উতরেও গেলেন।
অবশ্য ২-১ গোলের জয়টা ম্যাচের আসল চেহারাও একদমই
বোঝাচ্ছে না। এমন একটা নিষ্প্রাণ প্রথমার্ধ এল ক্লাসিকোয় শেষ কবে হয়েছে
মনে করা কঠিন। তার মধ্যে অবশ্য একটা ঘটনা বিতর্ক উসকে দেওয়ার মতোই। ২৬
মিনিটে মনে হয়েছে, বক্সের মধ্যে লিওনেল মেসিকে ফেলেই দিয়েছিলেন সার্জিও
রামোস। এর আগেই হলুদ কার্ড দেখেছিলেন। কিন্তু রেফারি পেনাল্টি দেননি,
রামোসও লাল কার্ডের হাত থেকে সেবার বেঁচে যান। শেষ পর্যন্ত অবশ্য রামোসকে
ছাড়াই ম্যাচ শেষ করেছে রিয়াল। ৮৪ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে
হয় রিয়াল ডিফেন্ডারকে।
তবে ওই ঘটনার আগে-পরে হয়ে গেছে অনেক নাটক। ৭৯
মিনিটে দারুণ এক হেড থেকে বল জালে জড়িয়েই উল্লাসে ফেটে পড়লেন গ্যারেথ বেল।
কিন্তু রেফারি জানিয়ে দেন, হেড করার সময় জর্ডি আলবাকে ফাউল করেছেন বেল।
রিপ্লে অবশ্য গোলটাকে অবৈধ বলতে পারেনি। মিনিট খানেক পরেই রোনালদোর শট যখন
বারে চুমু খেয়ে চলে গেল, মনে হচ্ছিল ভাগ্য রিয়ালের পক্ষে নেই। এর পর তো
রামোসের লাল কার্ড। কিন্তু ৮৫ মিনিটেই দারুণ এক প্রতি আক্রমণ থেকে বেলের
ক্রসেই গোল করে রোনালদো এগিয়ে দেন রিয়ালকে। আর সমতা আনতে পারেনি
বার্সেলোনা।
অথচ ম্যাচের ৫৬ মিনিটে গোল করে এগিয়ে গিয়েছিল বার্সাই।
কর্নার থেকে দারুণ এক গোল করেন জেরার্ড পিকে! কিন্তু ৬৩ মিনিটে করিম
বেনজেমার দুর্দান্ত এক সাইড কিকে সমতা ফেরায় রিয়াল।
কোচ হিসেবে প্রথম
ক্লাসিকোতেই জয়, জিদানের জন্য ম্যাচটি স্মরণীয়। ২০০৭-০৮ মৌসুমে বার্নড
সুস্টারের পর এই প্রথম রিয়ালের কোনো কোচ অভিষেক ক্লাসিকোতেই জয় পেলেন। তবে
জিদান শিরোপার টিমটিমে আশা জ্বালিয়ে রাখতে পেরেই হয়তো বেশি খুশি। রিয়াল
বার্সার সঙ্গে পয়েন্টের ব্যবধান কমিয়ে এনেছে সাতে, ম্যাচ বাকি অবশ্য ৮টি।
তবে গ্যারেথ বেল আশায় বুক বাঁধছেন, ‘ওদের কয়েকটা হোঁচট খাওয়া এখন দরকার। আর
নিজেদের কাজটা ঠিকঠাক করলেই হবে।’ জিদান অবশ্য কিছুটা সতর্ক, ‘আগে
অ্যাটলেটিকোকে টপকাতে হবে আমাদের। সামনে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচ (আগামী
পরশু ভলফ্সবুর্গের সঙ্গে কোয়ার্টার ফাইনাল) আছে, তার পর আমরা পরের ম্যাচ
নিয়ে ভাবব।’
বার্সেলোনা কোচ লুইস এনরিকে পারলে ম্যাচের পরই স্মৃতিটা
ঝেড়ে ফেলেন, ‘এই ম্যাচের এখন কোনো অস্তিত্ব নেই। কোনো হতাশা নেই আমাদের।’
অবশ্য দুই দিন পরেই চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সার প্রতিপক্ষ
অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, ক্লাসিকোর হারে বিহ্বল হয়ে পড়ার তাই সময় নেই। এএফপি,
রয়টার্স।
No comments:
Post a Comment